৫/৬ বছর আগের ঘটনা। আরো বেশী আগেরও হতে পারে। ঠিক মনে নাই। সকালে উঠে আব্বার রুমের খাটের উপর দাড়িয়ে মশারি খুলেছি। তারপর খাট থেকে সরাসরি ফ্লোরে, মানে অনেকটা লাফ দিয়ে নামতে গেছি। এরকম আগেও করেছি। কিন্তু সেদিন কি যেন হলো, পা মনে হয় একটু হড়কে গিয়েছিলো। সামনেই ছিলো সোফা। সোফার একটা পায়া আমার বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুল আর আর তার পাশের আঙ্গুলের মাঝে গিয়ে লাগলো, বা ভাইস ভার্সা। সেসময় ব্যথা ঠিক কি পরিমাণ পেয়েছিলাম সেটা এখন আর বলে বুঝানো যাবে না। ব্যথা বেশ কিছুক্ষণ ছিলো। সারাদিনই ধরতে গেলে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চললাম। কিন্তু বিকলের দিকে আর থাকা গেলো না। প্রচন্ড ব্যথা।
শেষতক রিক্সা নিয়ে কাছের ক্রিসেন্ট হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে গেলাম। ডিউটি ডাক্তার সব শুনে বললেন ভাঙ্গে নাই, কারণ ভাঙ্গলে আরো বেশী ব্যথা হতো শুরু থেকেই। হাটাও সম্ভব ছিলো না। তারপরও এক্সরে করতে দিলেন। এক্সরে সব নরমাল, মানে কোথাও ভাঙ্গে নাই। ডাক্তার বললেন খূব সম্ভবত লিগামেন্ট ছিড়ে গেছে। যাই হোক। ঔষধ দিলেন কিছু, ব্যথা কমানোর। সাথে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট। আর বললেন কমপ্লিট রেষ্ট। পায়ের এই অংশে যত চাপ পড়বে ব্যথা তো দীর্ঘস্থায়ী হবে। শেষে ক্রেপ ব্যান্ডেজ দিয়ে পা মুড়িয়ে দিলেন।
কিছুদিন পরেই ব্যথা সেরে গেলো। সপ্তাহ খানেক পর হাটাহাটি শুরু করতে পেরেছিলাম সেবার।
কিছুদিন আগে ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় পা একটা ভাঙ্গা অংশে পড়ে সেই একই জায়গায় আবার ব্যথা পেলাম। প্রথম দিন ব্যথা তেমন ছিলো না। কিন্তু ২/৩ দিন পর ব্যথা বাড়তে থাকলো। পায়ের সেই অংশ একটু ফুলেছিলো। ডাক্তার দেখানোর পর আবার এক্সরে এবং অন্যান্য পরীক্ষা। ডাক্তার পায়ের অবস্থা দেখে ইউরিক এসিড বেড়েছে সন্দেহ করছিলেন।
পরীক্ষায় দেখা গেলো ইউরিক এসিড কিছুটা বেড়েছে, তবে স্বাভাবিক মাত্রার আপার লিমিটের কাছাকাছি। ব্যথার ঔষধ চললো ৩ দিন। নরমালি ব্যথা নাই, তবে বুড়ো আঙ্গুলে চাপ পড়লে ব্যথা লাগে। বাইরে যাওয়া এবং হাটাহাটি বন্ধ আপাতত। এখন কেবল টিজি কমানোর ঔষধ খাচ্ছি। ইউরিক এসিডের জন্য আরেকটা ঔষধ দিয়েছেন। সেটা কয়েকদিন পর শুরু করতে হবে।
আপাতত এই ভাবেই চলছে। আরো কিছুদিন হয়তো এভাবেই চলবো। আমার বন্ধুদের অধিকাংশই নিয়মিত কোন না কোন ঔষধ খায়। আমি একমা্র ব্যতিক্রম ছিলাম যে কোন নিয়মিত ঔষথ খেতাম না। সেটা আর থাকলো না। বুড়ো হতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু পাকেচক্রে বুড়ো হতেই হচ্ছে। কি আর করা।
ভাল থাকবেন সবাই।
ফেসবুক মন্তব্য