ছাগল

অবসরের পর আব্বা কিছুদিন দেশের বাড়ীতে ছিলেন। আমাদের দাদার ঘরের কোন অস্তিত্ব ছিলো না। বাড়ীতে গেলো চাচা, মামা বা কাজিনদের ঘরে থাকতে হতো। নানার একটা ঘর ছিলো বটে, তবে ১৯৭৪ সালে আমি প্রথমবার দেশের বাড়ীতে গিয়ে দেখি সেটি গোয়াল ঘর হিসেবে কে যেন ব্যবহার করে। পরে সেটিও হারিয়ে যায়। এখানে বলে রাখা ভাল আমার দাদা এবং নানা দু’জনে আপন ভাই। 

আব্বা বাড়ীতে গিয়ে প্রথম কাজ করলেন তার ভাই দের জন্য একটা ঘর তৈরী করা। আব্বার পেনশনের কিছু টাকা আর বড় চাচার দেয়া টাকা দিয়ে ছোটখাট একটা ঘর হলো। চারিদিকে ইটের গাথুনি আর উপরে টিন। ভিতরে ২/৩টা রুম ছিলো, রান্না ঘর, খাবার ঘর এসবও ছিলো। যদিও বাড়ীর কাজ খূব একটা ভাল হয়েছিলো সেটা বলা যাবে না। 

সেসময় আব্বার হঠাৎ ইচ্ছে হলো গ্রামের দরিদ্রদের জন্য কিছু করবেন। বড় চাচার সাথে পরামর্শ করে কিছু ছাগল কিনে বিতরন করলেন। নিয়ম করলেন ছাগল বাচ্চা দিলে একটা বাচ্চা আব্বাকে ফেরত দিতে হবে। আব্বা সেটি আবার অন্য কাউকে দিবেন। এভাবে চলতে থাকবে।

কিন্তু কিছুদিন পর খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো পরিস্থিতি খূবই খারাপ। কারো ছাগল হারিয়ে গেছে, কারো মারা গেছে ইত্যাদি নানা কিছু। মানে আব্বা আর বড় চাচার উদ্যোগ শুরুতেই মাঠে মারা গেলো। আব্বারও আর কখনই চেষ্টা করেন নাই কারো জন্য কিছু করার। 

মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।